রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ১০:০০ অপরাহ্ন
ঢাকা থেকে বরিশালে যাত্রীনিয়ে আসার পথে এমভি সুন্দরবন-১০ ও এমভি মানামী নামক দুটি লঞ্চের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। যদিও সুন্দরবন লঞ্চ র্তৃপক্ষ দাবি করেছে এমভি মানামী লঞ্চ তাদের ওপর আছরে পড়েছে। এতে উভয় লঞ্চের পেছনের অংশ ব্যপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তবে কোন হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও অল্পের জন্য যাত্রীরা রক্ষা পেয়েছে। আর ক্ষতিগ্রস্থ অংশ মেরামত করে সার্ভে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতিত উভয় লঞ্চের চলাচল স্থগিত করেছে বিআইডব্লিউটিএ।
পাশাপাশি পুরো ঘটনার তদন্তে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট, নৌ পুলিশের প্রতিনিধিসহ নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে। সেই কমিটির সদস্যরা বৃহষ্পতিবার (২৩ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১ টায় দুটি লঞ্চ পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শনে শেষে কমিটির সদস্য ও বিআইডব্লিউটিএ’র যুগ্ম পরিচালক (বন্দর ও পরিবহন) আজমুল হুদা মিঠু সরকার জানান, ওই ঘটনায় সুন্দরবর ১০ লঞ্চের মাঝামাঝি বাম পাশের অংশ ও মানামী লঞ্চের পিছনের ফ্যান্টারের নিচের অংশ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এ ঘটনা তদন্তে ইতিমধ্যে কমিটি করা হয়েছে। যারা লঞ্চদুটি পরিদর্শনও করেছে। পাশাপাশি উভয় লঞ্চ কতৃপক্ষকেই তা মেরামতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি মেরামতের পর সার্ভে কর্তৃপক্ষকে দেখানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারা যাচাই-বাছাই করে ত্রুটিমুক্ত মনে করলে লঞ্চদুটি পুনরায় চলাচল করতে পারবে। এর আগ পর্যন্ত লঞ্চদুটির যাত্রা স্থগিত করা হয়েছে।
নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড চিফ সার্ভেয়ার আবু হেলাল সিদ্দিকী জানান, নির্দেশনা অনুযায়ী লঞ্চ দুটি মেরামত করতে হবে। এরপর সেটি চলাচলের উপযোগী কিনা তা দেখা হবে। সুন্দরবন-১০ লঞ্চের মাষ্টার (চালক) মজিবর রহমান জানান, ঢাকা থেকে যাত্রী নিয়ে তারা বরিশাল যাচ্ছিলো। মেঘনার ইলিশা লাল বয়া পয়েন্টে বুধবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে সুন্দরবন ১০ লঞ্চটি পৌছায়। এসময় সেখানে পানি কম থাকায় তিনি লঞ্চের গতি কমিয়ে ফেলেন কিন্তু ওই চ্যানেলের মধ্যে এমভি মানামী লঞ্চ সুন্দরবন ১০ লঞ্চকে দ্রুত গতিতে ওভারটেক করে চরে আটকে যায়। চর থেকে নামানোর জন্য ফুলস্প্রীডে লঞ্চটিকে পেছনের দিকে ধাবিত করা হয়। এসময় সুন্দরবন-১০ লঞ্চের ওপর এমভি মানামী আছরে পড়ে। এতে সুন্দরবন ১০ লঞ্চের মাঝ বরাবর ব্যপক ক্ষতি হয়েছে। দুমড়ে-মুছড়ে ভচকে গেছে। অপরদিকে মানামী লঞ্চের পেছনের অংশ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
মানামী লঞ্চের মাষ্টার আসাদুজ্জামান এ ঘটনার জন্য নিজেকে নির্দোশ দাবী করে বলেন, ভিএইচএফ-এ তাদের লঞ্চ পেছনে যাবার খবরটি সুন্দরবন ১০ লঞ্চকে অবহিত করা হয়েছিলো। পাশাপাশি নিরাপদ দুরত্ব বজায় রাখতেও বলা হয়েছিলো, কিন্তু ওই লঞ্চ তার দেয়া তথ্যানুসারে গুরুত্ব না দেয়ায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
এদিকে দুর্ঘটনার পর লঞ্চদুটি চালিয়ে আজ বৃহষ্পতিবার সকালে বরিশাল নদী বন্দরে নিয়ে আসা হয়। প্রায় ২ হাজার যাত্রীদের নিরাপদে নামিয়ে দেয়া হয়েছে।